৪:৫৬ পিএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শনিবার |
| ১৭ জমাদিউস সানি ১৪৪০
আলফাজ সরকার আকাশ, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি : ‘স্কুলের টিফিন, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, এমনকি বাসায় সকালের নাস্তায় পাওয়া যায় স্থানীয় বেকারীতে তৈরী করা নানান
খাদ্য। শিশুদের রকমারী মজার আইটেমের নমুনা দিয়ে আকর্ষন করানো খাদ্যে স্বাস্থ্যসম্মত দিকটি নজরে আসছেনা কারো। কি দিয়ে ও কি ভাবে এ রকমারী আইটেমগুলো উৎপাদন করছে বেকারীর মালিকরা তা কেউ খতিয়ে দেখছেনা।
সরেজমিনে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তায় নিউ সানি ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরী এবং মাওনা পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে
সাওদা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে গিয়ে দেখা যায়, খাবার পন্য উৎপাদনের কোন রকম নিয়মের তোয়াক্কা না করে উৎপাদন হচ্ছে এসব পন্য।
কথা হয় নিউ সানি ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে কর্মরত ১০বছরের শিশু নাঈমের সাথে। স্কুলে যাওয়া বাদ দিয়ে কাজ করে এখানে সে। এখানে কাজ করে যে টাকা পায় তা দিয়ে চলে তার জীবন। তবে স্কুলে যেতেও ইচ্ছে করে তার।
অন্যদিকে মাওনা পল্লি বিদ্যুৎ মোড়ে সাওদা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীতে গিয়ে দেখা যায়, দোকান থেকে ফেরত আনা মাল মিশানো হচ্ছে নতুন উৎপাদন করা খাদ্যের সাথে। এছাড়াও নোংরা পরিবেশে হাত গøাফ ছাড়াই ময়দার খাম্বি তৈরী করা হচ্ছে। তার সাথে বেন বেন করছে বিভিন্ন মাছি।
বিশ্লেষকদের মাধ্যমে জানা যায়, ওই সকল খাদ্যে মিশানো হচ্ছে বিষাক্ত রকমারি ক্যামিকেল। যা মানব দেহের জন্য মারাক্তক ক্ষতিকর। তা জেনেও এসব খাবারে মিশানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে নিউ সানি ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর মোঃ হারুন অর রশিদ নিজেকে একজন মানবাধিকার সংগঠক পরিচয় দেন। এছাড়াও তিনি একাধিক সামাজিক উন্নয়ন মূলক সংস্থার সাথে জরিত বলে দাবী করে তার একটি ভিজিটিং কার্ড প্রদর্শন করেন। শিশু শ্রমের ব্যাপারে তিনি জানান, টাকা দিয়েই কাজ করাই।
অন্যদিকে সাওদা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর আলম মিয়া জানান, ময়দার খাম্বি খালি হাত দিয়েই তৈরী করতে হয়। আমরা সরকারী সকল নিয়ম কানুন মেনেই বেকারী চালাই।
এব্যাপারে স্থানীয় মনিরা সুলতানা জানান, স্কুলে আসার সময় রাস্তার পাশে থাকা এক দোকান থেকে কেক কিনে দিয়েছিলেন তার
বাচ্ছাকে। সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় পাতলা পায়খানা, বেট ব্যাথা ও বমি। ডাক্তার জানায় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলেই এমন অবস্থা হয়েছে।
এব্যাপারে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মইনুল হক জানান, অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ফলে ফুট
প্রয়জনিং জনিত বিভিন্ন রোগ দেখা দেয়। যার মধ্যে পাতলা পায়খানা, কলেরা, বমি, বেট ব্যাথা ইত্যাদি।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্যানেটারী ইনেস্পেক্টর ও নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে খাদ্য উৎপাদন করায় ইতোপূর্বে নিউ সানি ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীর বিরোদ্ধে দুটি মামলা দেয়া হয়েছে। এছাড়াও ভ্রাম্যমান আদালতের
মাধ্যমে জরিমানাও করা হয়েছে। তবে বর্তমানে এটা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দেখে।
অন্যদিকে সাওদা ব্রেড এন্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরীকেও মামলা দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু কোন অদৃশ্য ক্ষমতা বলে উৎপাদনের নিয়ম না মেনে আবারও খাদ্যপন্য তৈরী করছে তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। এছাড়াও শিশু শ্রমের ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।