আব্দুল্লাহ ফাহাদ জাকির (জবি): জগন্নাথ ববিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধার জন্য মেঘনা গ্রুপ কর্তৃক উপঢৌকন হিসেবে পাওয়া বাস দুটি এখন শিক্ষকদের চলাচলের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে । প্রায় দেড় মাস বিশ্রামে রাখার বাস দুটিতে হঠাৎ করেই ‘শিক্ষকবৃন্দের বাস’ লেখা কাগজ দেখে বিস্মিত হয়েছেন উপস্থিত শিক্ষার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালেয়র সংকীর্ণ একটা ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত একাডেমিক ভবন না থাকায় অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করছে শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে হল না থাকায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ঢাকা শহরের বিভিন্ন মেস,বাসা ভাড়া করে থাকতে হচ্ছে।
ক্যাম্পাসে যাতায়াতের জন্য অন্য সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হল থাকা সত্ত্বেও আছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পরিবহণ সুবিধা, এমনকি অতিরিক্ত বাসও অথচ অনাবাসিক জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের জন্য পর্যাপ্ত বাসের সুবিধা তো নেই-ই, এমনকি ন্যূনতম ধরনের পরিবহণ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। আর মাত্র এক শিফটের বাস চালু আছে বিধায় অনেক সময় নষ্ট করেও এক তৃতীয়াংশ ছাত্রছাত্রীও পরিবহণ সুবিধা পাচ্ছেনা।
জবির পরিবহণ ব্যবস্থার এই অবস্থা থেকে কিছুটা উত্তরণের জন্য সুনজর আসে মেঘনা গ্রুপের আর তাই শিক্ষকদের জন্য দুটি মাইক্রোবাস এবং শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি বাস উপহার স্বরূপ প্রদান করেন। জবি পরিবহন পরিবহন কর্তৃপক্ষ এ ব্যপারে জানতে চাইলে বলেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পরিবহনের জন্য দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন।
বাসের চাবি হস্তান্তর সভায় উপস্থিত ছিলেন মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল, তার সহধর্মিণী, ছেলে তানভীর আহমেদ ও জবির ভাইসচ্যান্সেলর জনাব মিজানুর রহমান, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি কাজীসাইফুদ্দিন আহমেদ,অর্থনীতি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান জনাব ড.প্রিয় ব্রত পাল সহ বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক, শিক্ষকমন্ডলী এবং আগামী দেশ গড়ার কারিগর একঝঁক তরুন-মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও গুণীজনেরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জন্য দুটি মাইক্রোবাস ও শিক্ষার্থীদের জন্য ৫৪ সিটের বড় দুটি বাস উপহার দেন গত বছরের ২২ নভেম্বর,আর চাবি হস্তান্তরের কিছুদিনের মধ্যেই শিক্ষকদের মাইক্রোবাস দুটি চালু করে জবি প্রশাসন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাস দুটি দেড়মাস পড়ে থাকার পর আজ শিক্ষকদের ব্যানারে চালু হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জন্য যেখানে আছে শিক্ষার্থীদের তুলনায় পর্যাপ্ত পরিমাণের বাস সুবিধা,এমনকি কয়েকজন শিক্ষকের জন্য বিশাল বাস সেখানে শিক্ষার্থীদের বাস ওনাদের দখলেই নিয়ে গেলেন।
পর্যাপ্ত বাসের অভাবে শিক্ষার্থীরা গাদাগাদি করে,জীবনের ঝুকি নিয়ে ক্যাম্পাসে আসলেও সুনজর পড়ছে না কর্তৃপক্ষের। বহু কষ্ট করে যাচ্ছেন ছাত্রছাত্রীরাই, আর শিক্ষকদের জন্য পর্যাপ্ত পরিবহণের সুবিধা তো আছেই দরকার শোডাউন করার জন্য আরো বাস । শিক্ষার্থীরা ঘন্টার পর ঘন্টা বাসে ঝুলে যাতায়াত করুক, চাই মরুক, তাতে কারো মাথা ব্যাথা নেই।
অপর্যাপ্ত যানবাহন,বাসের একটি মাত্র ট্রিপ,বহুতল ক্যাম্পাস,হল,ক্যান্টিনের চড়া দামে নিম্ন মানের খাবার,ভাল পরিবেশের অভাবে দুর্বিষহ দিনাতিপাত যেন নিত্য সঙ্গী তাদের। সক্রিয় উদ্যোগ নেই সরকার ও জবি প্রশাসনের। রাগে,ক্ষোভে সোনালী দিন কাটাচ্ছেন অন্তরীয় দহনে।
সম্পাদনা/এফ আই