৬:৫০ এএম, ১২ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার |
| ৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
এসএনএন২৪.কমঃ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলাদেশ এখন আর শ্রমঘন অর্থনীতির দেশ নয়, তথ্য প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ একটি দেশ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্ব এবং ডিজিটাল আর্কিটেক্ট সজীব ওয়াজেদ জয়ের তত্ত্বাবধান ও পরামর্শে প্রযুক্তির উদ্ভাবনী সংস্কৃতিতে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে প্রযুক্তি নির্ভর মেধাবী উন্নত দেশ হবে বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকার, বলেন পলক।
রোববার (২৪ জুলাই) দুপুরে নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে আইটি-হাই-টেক পার্ক এবং সিনেপ্লেক্স ও ডরমেটরি ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল ১১টায় শেরকোল এলাকায় ঢাকায় নিযুক্ত বিদায়ী ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামীকে সঙ্গে নিয়ে সিংড়া আইটি-হাই-টেক পার্ক এবং সিনেপ্লেক্স ও ডরমেটরি ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। একই সঙ্গে প্রতিমন্ত্রী পলক দোরাইস্বামীকে সঙ্গে নিয়ে নির্মাণাধীন হাই-টেক পার্ক প্রাঙ্গণে গাছের চারা রোপণ করেন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, বর্তমানে দেশে তথ্য প্রযুক্তি খাতে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তি খাতে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার উপার্জন করছে বাংলাদেশ। কায়িক পরিশ্রমের জন্যে কষ্টকর প্রবাস জীবন নয়, তথ্য প্রযুক্তির প্রশিক্ষণ নিয়ে এদেশের তরুণ-তরুণীরা ঘরে বসেই বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক নতুন দিগন্তের সূচনা হতে চলেছে দেশে।
আমাদের প্রধান লক্ষ্যই হচ্ছে তারুণ্যের অফুরান শক্তিতে প্রযুক্তি নির্ভর দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা। এ লক্ষ্য পূরণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি এবং মাইক্রো প্রসেসর নিয়ে কাজ করছে দেশের প্রযুক্তি খাত। আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মেধাভিত্তিক শীর্ষ প্রযুক্তির দেশে পরিণত হবে বাংলাদেশ। আর এ লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সততা, সাহসিকতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের কোনো বিকল্প নেই, যোগ করেন প্রতিমন্ত্রী।
পলক আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি এবং আবহাওয়া একই। আমরা দুই দেশের মানুষের চলমান বন্ধুত্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের এক হাজার ৯৮৪ সেনা সদস্যের জীবন উৎসর্গসহ ভারতের অসামান্য অবদানকে এদেশের মানুষ শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে।
সম্মানীত অতিথির বক্তব্যে বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী বলেন, বাংলাদেশের ১২টি জেলায় হাই-টেক পার্ক স্থাপন কার্যক্রমে বিনিয়োগসহ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে যৌথভাবে কাজ করছে বাংলাদেশ-ভারত। এসব পার্ক স্থাপন কার্যক্রম সম্পন্ন হলে এদেশের তরুণ-তরুণীরা উপকৃত হবেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক আরও উন্নত হবে এবং অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব আরও জোরদার হবে।
বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বর্তমানে সারা দেশে ৯২টি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক/আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।
এরই মধ্যে ৯টি পার্ক স্থাপনের কাজ সমাপ্ত হয়েছে এবং ব্যবসায়ীক কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত হাই-টেক পার্কগুলোতে ১৯০টি প্রতিষ্ঠানকে স্পেস ও প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ১২৩টি প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে এবং ১৫১টি স্থানীয় স্টার্টআপ কোম্পানিকে বিনামূল্যে স্পেস, কো-ওয়ার্কিং স্পেস বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, নাটোরের জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অহিদুর রহমান শেখসহ অনেকে। অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগ ও বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিনিধি ও জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। শেষে প্রযুক্তিতে সফল ১৯ জন উদ্যোক্তার হাতে ল্যাপটপ তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।
এদিকে প্রকল্প পরিচালক একেএমএম ফজলুল হক বলেন, সিংড়া উপজেলার শেরকোলে ১৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯ দশমিক ২৮ একর জমির ওপর বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ এ আইটি/হাই-টেক পার্ক নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে তিন হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিসহ প্রতি বছর এক হাজার তরুণ-তরুণী প্রশিক্ষণের সুযোগ পাবেন। হাজার হাজার তরুণ-তরুণী ঘরে বসে ইউরোপ-আমেরিকার মার্কেটপ্লেসে কাজ করে ডলার উপার্জন করতে পারবেন। হাই-টেক পার্কে স্টিল স্ট্রাকচারের সাততলা মাল্টিটেন্যান্ট ভবন, তিনতলা ডরমেটরি ভবন, একটি সিনেপ্লেক্স ভবন ও থাকছে একটি খেলার মাঠসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা।