৫:১৭ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০২৩, বুধবার | | ১৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫




ফেসবুক স্ট্যাটাস দেয়ার উদ্দেশ্যটা সৃজনশীল মানুষকে ভূমিকা রাখতে হবে

০৭ অক্টোবর ২০২০, ০৭:০০ পিএম |


নজরুল ইসলাম তোফা:: ফেসবুক ইংরেজি শব্দ থেকে এসেছে।  এটিকে সংক্ষেপে 'ফেবু' নামেই পরিচিতি লাভ করে।  বিশ্ব-সামাজিক আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থার একটি গুরুত্ব পূর্ণ ওয়েবসাইট, যা ''২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি'' প্রতিষ্ঠিত হয়।  এটিতে বিনামূল্যে সদস্য হওয়া যায়। 

এর মালিক হলেন, ফেসবুক ইনক।  ব্যবহারকারীগণরা "বন্ধু সংযোজন করা, বার্তা প্রেরণ করা সহ তাদের ব্যক্তিগত তথ্যাবলী হালনাগাদ এবং আদান প্রদান করতে পারেন, তার সঙ্গে ব্যবহারকারী শহর, কর্মস্থল, বিদ্যালয় কিংবা অঞ্চল-ভিক্তিক নেটওয়ার্কেও যুক্ত হতে পারেন। 

আরও জানা প্রয়োজন যে, শিক্ষাবর্ষের শুরুতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যকার উত্তম জানাশোনাকে উপলক্ষ করে ফেসবুকটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রদত্ত বইয়ের নাম থেকেই  ফেসবুক ওয়েবসাইটটির নামকরণ করা হয়।  সুতরাং এ গুরুত্বপূর্ণ ওয়েবসাইটটি বেশির ভাগ মানুষ নেতিবাচক কাজে ব্যবহার করে অহেতুক সময় নষ্ট করছে।  বলতেই হয় যে, ফেসবুকে লাইক, কমেন্ট পাওয়া জন্যই ব্যবহার করে থাকে। 

কিন্তু ফেসবুক স্ট্যাটাস মাধ্যমেই যে কোনো ব্যক্তির হাজার হাজার কমেন্ট যে আসে তা নয়, আবার যাদের আসে সেই কমেন্টের উত্তর দেওয়াটাও  কারোর পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠে না। 

এটাও দেখা যায়, যার কোনো কাজ নেই তারা কমেন্টের উত্তর দেয়ার জন্যই যেন বসে থাকে।  তীক্ষ্মভাবে পোষ্টের প্রতিটি কমেন্ট পড়ার চেষ্টাও করে থাকে।  কেউ আবার না বুঝেই 'দু'এক লাইন' উত্তর দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়।  সুযোগ পেলে অনেকে নিজের ফেসবুক বন্ধুদের নেতিবাচক উত্তর দেয়াতে যেন আগ্রহ পোষণ করে।  প্রশংসা করবার মানসিকতা মানুষের নেই বললেই চলে। 

দিনে দিনে মানুষ মানষকেই প্রসংশা করা থেকে সরে পড়বে বলেই ধারণা করি।  পাবলিক কমেন্টে মাঝে মাঝেই বেশকিছু অদ্ভূত সুন্দর কমেন্ট চোখে পড়ে যা থেকে মানুষের উৎসাহ বাড়ে। 

যাদের প্রসংশা কিংবা উৎসাহ দেওয়া হয়, তারা ভালো পোস্ট দেওয়ার ইচ্ছাটা অব্যাহত রাখে।  যার যা কিছু পরিধি বা মেধা, "ফেসবুক প্রোফাইল" দেখলেই- তা বুঝা যায়।  লাখো কোটি মানুষ মানুষের কখনো ভক্ত হয় না, যাদের হয় তাদের অবশ্যই অনেক গুন আছে।  হিরো আলমের মতো দুএকটা ছোট খাটো উদাহরণ ছাড়া। 

ফেসবুক পেইজ একটা নিউজ পেপারের অংশই বলতে পারেন।  কখনো কখনো তার চাইতেও বেশী।  কিছু কিছু চিরস্থায়ী গিট্টুবাজের দল সহ অধিকাংশ মানুষ এর মর্ম বুঝে না, অহরহ ফাসাদ সৃষ্টি করে।  কেউ বিরোধী মতের হলে তার লেখার কটূক্তি করা চাই।  'সত্য কথার' সত্যতা খোঁজার ইচ্ছা একেবারেই থাকে না।  আবার এটাও যেন চোখে পড়ে কিছু ভালো মানুষ আছে, তারা কম সংখ্যক হলেও ভালো লেখা বা স্ট্যাটাসের অনেক মূল্যায়ন করে ধন্যবাদ কিংবা ইংরেজিতে থ্যাংকইউ দেয়ার চেষ্টা করে, এই আকালের যুগে তাদেরকে প্রকৃত ভালো মানুষ বলে মনে করি। 

বিভিন্ন অনিয়মে সমাজের মানুষ আজ নীরব ভূমিকায় ক্ষুদ্ধ আছেন।  দু'একটা চিন্তাশীল ভালো মানুষ আছে বলেই তরুণ প্রজন্মরা তাদের কাছ থেকেই সঠিক সু-শিক্ষা পাচ্ছে।  আমার খুবই কাছের একজন বললেন, তিনি হচ্ছেন রাজশাহীর বর্নালী মোড়ের- 'হাসান সিজার ভাই'।  এক সময়ে তিনি ফেসবুক ব্যবহারকারী ফ্রেন্ডদের কমেন্টে খুব রাগ করতেন।  তবে এখন তিনি রাগ করেন না।  অনেক বিচার বিশ্লেষন করে তিনি দেখলেন আসলে গিট্টুবাজ সমাজে প্রতিনিয়তই- খুব ভয়ানক কিছু ঘটছে এবং আগামীতেও ঘটবে।  এখান থেকেই মানুষের বাহির হওয়ার পথ তিনি দেখছে পাচ্ছে না।  সুতরাং বেশী সাহস দেখাতে গেলে কর্মহীন হয়ে যেতে পারেন।  তাই, বিনয়ের নামে উটপাখী হয়েই আত্মরক্ষা করছেন, নইলে বন্ধুদের রোষানলের পড়ে যাওয়ার ব্যাপার আছে।  একটি প্রবাদ বাক্য তা হলো 'সুসময়ে অনেকেই বন্ধু হয়, অসময়ে হায় হায় কেউ কারো নয়'।  যুগের তালে চলছেই চিন্তার ক্ষয়, বন্ধুকে কিছু বলা অতিশয় ভয়। 

যাক, আজকের লেখাটা ছোট হলেও হয়তো একটু ভিন্ন ধরনের সবার তেমন ভালো লাগবে না।  যারা ফেইসবুক ব্যাবহার করি, তাদের কাছেই ফেইসবুক ফটো কমেন্টস একটি দরকারী বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।  আবারও বলতে চাই, প্রতিনিয়তই যেন আমরা কম বেশী অন্যের কোনো স্ট্যাটাসের কমেন্ট করে থাকি।  তার মধ্যেই এখন বেশির ভাগই করে থাকে ফটো কমেন্টস।  সুতরাং ফেসবুকে যে কেউ উত্ত্যক্ত বা বাজে কমেন্ট করলেই, যা করা দরকার তা হলো, বাংলাদেশের 'পুলিশের অফিসিয়াল ফেসবুক' পেজের তথ্যমত বা পরামর্শ।  প্রথমে ফেক অ্যাকাউন্টের বিরুদ্ধে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে হবে।  এজন্যই ফেক আইডির প্রোফাইলে যেতে হবে।  তার পর ওই পেজের message বক্সের পাশেই যেন ৩টি ডট (…) চিহ্নিত আইকনে ক্লিক করে Find Support or Report Profile-এ যেতে হয়।  পুলিশকে এমন কটূক্তি উত্ত্যক্ত বা বাজে মন্তব্যের তথ্য জানানো দরকার।  এখানেই আরও একটি কথা বলা প্রয়োজন ফেসবুক ব্যবহারকারী ফ্রেন্ড সেজেই হয়তো উত্ত্যক্ত করবে।  এদের অনেকের আইডি ফেক হয়। 

এ দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অর্থাৎ ফেসবুকের ব্যবহারকারী যেমন বাড়ছে, ঠিক সেই সঙ্গে বাড়ছে ফেসবুকে হেনস্থার ঘটনাও।  ইনবক্স, কমেন্টস ও টাইমলাইনে বাজে মেসেজ কিংবা ছবি পাঠিয়েই উত্ত্যক্ত করেন অনেকেই।  পরিশেষে, চিহ্নিত করেই বলতে পারি, বর্তমান সময়ে মানুষ মানুষের "মহাশত্রু"।  মানুষের মঙ্গল কামনা করতে পারেনা।  এদের অবশ্যই ফেসবুক বন্ধুকে মান সম্মান সমুন্নত রাখার চেষ্টা করতে হবে।  যুগে যুগেই এই দেশে 'মহাজ্ঞানী মহাজনদের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা' আছে।  নতুন প্রজন্মকেই বড়দের তা সুশিক্ষা দিতে হবে। তাদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। 

লেখকঃ
নজরুল ইসলাম তোফা, টিভি ও মঞ্চ অভিনেতা, চিত্রশিল্পী, সাংবাদিক, কলামিষ্ট এবং প্রভাষক। 


keya