৬:১৮ এএম, ১২ অক্টোবর ২০২৪, শনিবার |
| ৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
এসএনএন২৪.কম : বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করাই বিএনপি-জামায়াতের লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি।
বুধবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়ায় "হৃদয়ে পিতৃভূমি" প্রতিপাদ্যে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যেই তারা (বিএনপি-জামায়াত) কাজ করছে। তারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকতে বাংলাদেশকে সন্ত্রাস, দুর্নীতি, লুটপাট করে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। মির্জা ফখরুল ইসলাম প্রতিদিনই বলেন, দেশে মেগা প্রজেক্টের নামে নাকি মেগা দুর্নীতি হচ্ছে। অথচ বিএনপি যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল তখন তো তারা উন্নয়ন করতে পারেনি। আমি তাদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, তারা ক্ষমতায় থাকতে ভালো কাজ করেছে, এমন একটা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বলুক। আজকে পর্যন্ত তারা বলতে পারেনি। নিজেরা ক্ষমতায় থেকেও কিছু করতে পারেনি, এজন্য আজ তারা প্রতিদিন উন্নয়নের বিরোধিতা করে কথা বলে।
আওয়ামী লীগের এ সিনিয়র নেতা বলেন, বাঙালির মুক্তির জন্য অনেকেই রক্ত দিয়েছেন। কিন্তু কেউ বাঙালিকে স্বাধীনতার স্বাদ, মুক্তি এনে দিতে পারেননি। অবশেষে আমাদের মুক্তি এসেছিল এই টুঙ্গিপাড়া থেকে জন্ম নেয়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম নেয়া বঙ্গবন্ধু ইতিহাসের মহানায়ক হিসেবে আর্বিভূত হয়েছিলেন। তিনি হয়েছেন বাঙালি জাতির পিতা। তিনি তার ৭ মার্চের ভাষণের মধ্য দিয়ে সারা বাংলায় অগ্নিশিখা জ্বালিয়েছেন। তার সেই ডাকে আমাদের মুক্তি এসেছিলো।
তিনি বলেন, ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৬২’র শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা ঘোষণা এবং ৬৯’র গণআন্দোলনের পথ ধরেই আমাদের স্বাধীনতা এসেছিলো। ৭০’ এর নির্বাচনে জনগণের নিরঙ্কুশ ম্যান্ডেট পাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা লড়াই, সংগ্রাম করে দেশ স্বাধীন করেছি। বাংলাদেশ কারো দয়ায় স্বাধীন রাষ্ট্র হয়নি। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মূল অনুপ্রেরণা ছিলো ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ।
তিনি বজ্রকন্ঠে উচ্চারণ করেছিলেন, ‘‘এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম, স্বাধীনতার সংগ্রাম’’। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, কিন্তু অর্থনৈতিক মুক্তি দেয়ার আগেই একাত্তরের পরাজিত শক্তি তাকে হত্যা করেছে। আজ তারই কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সোনার বাংলায় রূপান্তরিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা সকল সীমাবদ্ধতাকে মোকাবেলা করে শত প্রতিকূলতা, বাধা-বিপত্তির মধ্যেও বাংলাদেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন। আমরা আজ জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি লাভ করেছি।
হানিফ বলেন, প্রধানমন্ত্রী পটুয়াখালীর পায়রায় ১৩’শ ২০ মেগাওয়াটের তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। রামপাল, মাতারবাড়ী ও মহেশখালীতে কয়লাভিত্তিক মেগাপ্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়িত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে মহাকাশ বিজ্ঞানের যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। রূপপুরে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ চলছে। ঢাকায় মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কর্ণফুলী টানেল নির্মাণের মাধ্যমে যুগান্তকারী উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।
বিএনপি-জামায়াতের যেকোনো ষড়যন্ত্রকে রাজপথে প্রতিহত করার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে হানিফ বলেন, আমাদের লক্ষ্য একটাই, জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের উন্নয়নের শেষ ঠিকানা। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল ষড়যন্ত্র ভেদ করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবো।
বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আকতারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক অপু উকিল।