০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:৫৫ এএম |
নিজস্ব প্রতিবেদক :
চট্টগ্রাম নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসনে চলমান ৪টি প্রকল্প শেষ হলে উদ্ধার হওয়া খালে নৌকা চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসণ প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে রাজাখালী খাল-২ থেকে কল্পলোক আবাসিক এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের মেয়র বলেন, চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ দুটি, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি করে ১১ হাজার ৩৪৪ কোটি টাকার মোট চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
উদ্ধার হওয়া খালগুলোকে রক্ষার্থে প্রকল্প শেষ হলে সেখানে নৌকা চালুর পরিকল্পনা আছে আমার। কারণ প্রকল্প শেষ হলে খালগুলো রক্ষা করা হবে বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্য প্রকল্প শেষ হলে খালগুলোতে বিনোদনের ক্ষেত্র তৈরির জন্য বারইপাড়া খালসহ উদ্ধার হওয়া সবগুলো খালে নৌকা ও স্পিডবোট চালু করা হবে। খালে যখন মানুষ ময়লা দেখবেনা বরং স্বচ্ছ জলপ্রবাহে বিনোদনের উৎস খুঁজে পাবে তখন মানুষ আর খালে ময়লা ফেলবেনা। এ প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে এবং যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ ও রুটিন ওয়ার্ক পরিচালনা করলে চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা কমবে। পাশাপাশি, এ প্রকল্পগুলোর আওতায় খালপাড়ে নির্মিত সড়ক ও কালভার্টের কারণে নগরীর যোগাযোগ সক্ষমতা বাড়বে।
প্রকল্পগুলোর সুফল পেতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাড়ানো হবে মন্তব্য করে মেয়র বলেন, আমরা প্রকল্প এলাকাগুলোতে ময়লার ভাগাড়ও নির্মাণ করব। যাতে খালপাড়ের মানুষ বর্জ্য ফেলে খাল ময়লা দিয়ে ভরিয়ে না ফেলে। প্রকল্প এলাকায় উদ্ধার হওয়া খালসংলগ্ন ভূমি রক্ষায় সীমানা নির্ধারণী খুঁটি বসানো হবে। কারণ এ খালগুলোকে রক্ষার সাথে কর্ণফুলী এবং চট্টগ্রামের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িত।
চট্টগ্রামের ভৌগলিক অবস্থানের কারণে ভারী বর্ষণ, ঢল আর জোয়ারে নগরীতে পানিপ্রবাহ বেড়ে যায়। বৈশ্বিক জলবায়ুগত পরিবর্তনে আগামী কয়েক দশকে ভাটির দেশগুলোতে এই প্রবণতা আরো বাড়বে। আমাদের লক্ষ্য এই পানি যাতে জমে দীর্ঘমেয়াদী জলাবদ্ধতা তৈরি করতে না পারে সেজন্য যতদ্রুত সম্ভব পানি নগরী থেকে সমুদ্রপথে নিষ্কাশিত হওয়ার ব্যবস্থা করা।
এসময় প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল শাহ আলী জানান, সিডিএ’র জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় নগরীর বাকলিয়া এলাকার প্রায় ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পরস্পর সংযুক্ত ৩০-৩২ ফুট প্রস্থের রাজাখালী-১, রাজাখালী-২ এবং রাজাখালী-৩ খাল তিনটির খনন কাজের পাশাপাশি দুই পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল, রেলিং নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়া খাল দখল ঠেকাতে দুই পাশে নির্মাণ করা হয়েছে সড়কও। খালে এত বেশি পলিথিন ছিল যে অনেক স্থানে ৪ মিটার পর্যন্ত মাটি তুলে ফেলতে হয়েছে। এরপর বালু ফেলে ভরাট করে বিটুমিনের পরিবর্তে আরসিসি রোড নির্মাণ করা হচ্ছে। যাতে সড়কগুলো দীর্ঘমেয়াদে খালের পানিতেও নষ্ট না হয়।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্যানেল মেয়র গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, কাউন্সিলর আবদুস সালাম মাসুম, চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমান্ডার লতিফুল হক কাজমী, উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোর্শেদুল আলম, মশক ও ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা শরফুল ইসলাম মাহি।