৫:২০ এএম, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, মঙ্গলবার | | ২১ রজব ১৪৪৬




‘বাঁশখালী-মইশখালী’খ্যাত শিল্পী সনজিত আচার্য আর নেই

১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৩ এএম |


নিজস্ব প্রতিবেদক : ‌‘আমার মনের বেদনা বন্ধু ছাড়া জানে না’, ‘বাঁশখালী-মইশখালী পাল উড়াইয়া দিলে সাম্পান গুরগুরাই চলে’সহ হাজারো জনপ্রিয় গানের স্রষ্টা শিল্পী সনজিত আচার্য মারা গেছেন।  সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরের একটি হাসপাতালে এই সংগীতগুরু শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।  তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।  তিনি স্ত্রী ও তিন মেয়ে এবং অসংখ্য স্বজন রেখে যান।  সনজিত আচার্যের ছোট বোন সংগীতশিল্পী গীতা আচার্য মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  তিনি বলেন, সকালে দাদাকে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  তার মস্তিস্কে রক্তক্ষরণ হয়।  সন্ধ্যায় মারা গেছেন।  তার শেষকৃত্য সোমবার রাতেই বলুয়ার দীঘি মহাশ্মশানে হওয়ার কথা রয়েছে।  খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সনজিত আচার্য চট্টগ্রামের পটিয়ায় ছাপোরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।  ৫ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ।  ছোটবেলা থেকে গানের সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে নেন।  তিনি লোকগান, আঞ্চলিক গান, হালদাফাডা গান, ভান্ডারি গানসহ বিভিন্ন ঘরানার গান নিয়ে কাজ করেছেন।  তার লেখা ও সুর করা গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।  এক হাজারের বেশি গানের রচয়িতা সনজিত আচার্য।  চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও লোকগানের সঙ্গে গবেষণায় যুক্ত সাংবাদিক নাসির উদ্দিন হায়দার বলেন, সনজিত আচার্য লোক ও আঞ্চলিকের কালজয়ী অনেক গানের স্রষ্টা।  ১৯৭৮ সালে তার গান প্রথম গ্রামোফোন রেকর্ডে আসে।  কল্যাণী ঘোষের সঙ্গে দ্বৈতভাবে দুটি গান তখন রেকর্ড হয়।  ওই গান দুটি ছিল ‌‌‌‘গুরা গুরা কথা হই বাগানের আডালে’ এবং ‌‘সত্য গরি হও না কক্সবাজার লই যাইবা’।  এরপর শত শত অ্যালবাম বের হয় সনজিত আচার্যের।  তিনি সংগীত পরিচালনার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন।  সনজিত আচার্য লেখা দুটি নাটক সাম্পানওয়ালা ও সোনাই বন্ধু নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।  সাম্পানওয়ালা চলচ্চিত্রটির গানের গীতিকার ও সুরকার ছিলেন সনজিত আচার্য নিজে।  ‘কর্ণফুলীরে সাক্ষী রাখিলাম তোরে’ গানটি জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।  এ ছাড়া চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের দুই কিংবদন্তি শ্যাম সুন্দর বৈষ্ণব ও শেফালী ঘোষের গাওয়া অনেক দ্বৈত গানের স্রষ্টা ছিলেন সনজিত।  এই দুই শিল্পীর জন্য ‘ওরে বাস কন্ডাকটার’সহ অনেক গান সনজিত আচার্য লিখেছিলেন বলে জানিয়েছেন নাসির উদ্দিন হায়দার।  গুণী এই সংগীতজ্ঞের মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।  হাসপাতালে ভিড় করেন অসংখ্য শিল্পী ও শুভানুধ্যায়ী।  তারা বলেন, সনজিত আচার্য তার গানের মধ্যেই বেঁচে থাকবেন। 


keya