২:১৪ পিএম, ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, সোমবার |
| ১৮ শা'বান ১৪৪৬
এসএনএন২৪ডেস্ক: চীন, কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টাপাল্টি শুল্ক আরোপের কারণে যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে বিশ্ব বাণিজ্যে, তাতে বাংলাদেশের সামনে রয়েছে রফতানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা। তবে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে সরকারে নীতি কৌশল ব্যবসাবান্ধব করার ওপর জোর দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এমন বাণিজ্য যুদ্ধের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির পথে হাঁটতে অন্তর্বর্তী সরকারকে তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বাণিজ্য অংশীদার চীন, কানাডা ও মেক্সিকো। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ বলছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে চীন ১ হাজার ৫২২ কোটি ডলার মূল্যের পোশাক, কানাডা ৪৭ কোটি ডলারের এবং মেক্সিকো ২৪১ কোটি ডলারের পোশাক রফতানি করেছে।
এই বাণিজ্য অংশীজনদের মধ্যে উত্তপ্ত হচ্ছে সম্পর্ক। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে পণ্য আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা কার্যকর হওয়ার কথা ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে। বিপরীতে পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয় কানাডা, মেক্সিকো ও চীনও।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানান, ১৫৫ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলার মূল্যের মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে তার সরকার। প্রথম ধাপ শুরু হবে ৪ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় ধাপে বাকি ১২৫ বিলিয়ন কানাডিয়ান ডলারের মার্কিন পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ হবে ২১ দিনের মধ্যে।
শুধু তাই নয় মার্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান গুগলের বিরুদ্ধে আস্থা ভঙ্গের অভিযোগ এনে তদন্তেরও ঘোষণা দিয়েছেন চীন। তবে শুল্ক কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মেক্সিকো ও কানাডার পণ্যে শুল্ক আরোপ এক মাসের জন্য স্থগিত করেন ট্রাম্প। আলোচনা করবেন চীনের সঙ্গেও।
বিশ্ব অর্থনীতির শীর্ষ দুই দেশ চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধে কানাডা, মেক্সিকো জড়িয়ে পড়ায় মার্কিন বাজারে বাংলাদেশি তৈরি পোশাক রফতানি বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে তা কাজে লাগাতে বিদ্যমান জ্বালানি ও ব্যাংকিং সমস্যা সমাধানে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ ব্যবসায়ীদের।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) সভাপতি মো. হাতেম বলেন,
সরকার যদি পলিসি ঠিক করে দেয়, তাহলে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে সেটি কাজে লাগানো যাবে। তাই সময়োপযোগী পলিসি নিতে হবে। এতে দেশের রফতানি আগামী কয়েক বছরে ভালো অবস্থানে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এদিকে দীর্ঘমেয়াদে বাণিজ্য সুবিধা ভোগ করতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির তাগিদ দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা। অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবীর বলেন,
ডোনাল্ড ট্রাম্পের চলতি মেয়াদেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। কারণ চীন-মার্কিন অনিশ্চয়তা সামনে বাড়তে পারে। আর এতেই সুযোগ তৈরি হবে বাংলাদেশের জন্য। যা লুফে নিতে হবে।
রফতানি আয়ের পরিসংখ্যান বলছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশ তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার।